সাবস্টেশন কি? এবং Sub-Station এর ভিতরে কি কি থাকে? জানতে হলে আপনাকে এই আর্টিকেল টি ভালোভাবে পড়তে হবে। কি ভাবছেন আর্টিকেল টি আপনার কোন কাজে আসবে না, যদি তাই হয় আপনি এড়িয়ে যেতে পারেন।
সাবস্টেশন |
আশা করি আজকের এই পোস্ট টি সকল ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার এবং যারা সাবস্টেশন অর্থাৎ উপকেন্দ্র সম্পর্কে জানতে ইচ্ছুক তাদের সাহায্য করবে।
সাবস্টেশন (Substation ) নিয়ে যেসব তথ্য জানবো সেগুলো নিচে দেওয়া হলঃ
- সাবস্টেশন কি?
- সাব-স্টেশন কি কাজ করে?
- সাবস্টেশন কত প্রকার কি কি?
- সাবস্টেশনের সার্কিট ডায়াগ্রাম?
- সাবস্টেশনের ভিতরে কি কি থাকে?
- সাব-স্টেশন ক্যাপাসিটি ক্যালকুলেশন করার পদ্ধতি?
- সাব-স্টেশন থেকে আমাদের বাড়ি পর্যন্ত কি ভাবে বিদ্যুৎ আসে?
- বহুতল বাসাবাড়িতে কি ধরনের সাবস্টেশন ব্যবহার করা হয়?
- শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো তে কি ধরনের সাবস্টেশন ব্যবহার করা হয়?
সাবস্টেশন কি? এবং Substation ভিতরে কি কি থাকে?
✅ সাবস্টেশন কি?
সাবস্টেশন হলো জেনারেশন, ট্রান্সমিশন এবং ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম এর একটি অংশ।এছাড়াও সাবস্টেশন পাওয়ার ফ্যাক্টর ইমপ্রুভমেন্ট, কনভার্টিং অর্থাৎ এসি থেকে ডিসি এবং ডিসি থেকে এসি তে রূপান্তর করতে সাহায্য করে।
এছাড়াও উচ্চচাপ এর ভোল্টেজ গ্রহণ করে ট্রান্সফারের মাধ্যমে নিম্নচাপে রূপান্তর করার পর একাধিক ফিডার এর মাধ্যমে গ্রাহকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে থাকে।
✅ সাব-স্টেশন কি কাজ করে?
হাই ভোল্টেজ এবং high-frequency কে কন্ট্রোল করার পর, পাওয়ার স্টেশন থেকে সেই বিদ্যুৎকে বিভিন্ন কাজে ব্যবহার উপযোগী করে ডিস্ট্রিবিউশন করায় সাবস্টেশনের এর কাজ।
✅ সাব-স্টেশন কত প্রকার কি কি?
সাবস্টেশন বিভিন্ন ধরনের হতে পারে, সাধারণত সাবস্টেশন কে দুই ভাগে ভাগ করা যায়।
- ভোল্টেজ এর ধরন অনুসারে,
- এবং ব্যবহারের ধরন অনুসারে।
ভোল্টেজ এর ধরন অনুযায়ী সাবস্টেশন(Sub-Station) দুই প্রকারঃ
- স্টেপ আপ(Step-Up) সাবস্টেশন
- স্টেপ ডাউন(Step-Down) সাবস্টেশন
স্টেপ আপ(Step-Up) সাবস্টেশনঃ
যে সাব-স্টেশন থেকে লো ভোল্টেজ কে হাই ভোল্টেজ এ কনভার্ট করে গ্রিডে প্রেরণ করা হয় তাকে স্টেপ আপ(Step-Up) সাবস্টেশন বা প্রাইমারি সাবস্টেশন বা জেনারেটিং সাবস্টেশন বা গ্রীড সাবস্টেশন বলে।
স্টেপ ডাউন(Step-Down) সাবস্টেশনঃ
যে সাব-স্টেশন থেকে হাই ভোল্টেজ কে লো ভোল্টেজ এ কনভার্ট গ্রাহককে সরবরাহ করা হয়, তাকে স্টেপ আপ(Step-Down) সাবস্টেশন বা সেকেন্ডারি সাবস্টেশন বা ডিসট্রিবিউশন সাবস্টেশন বলা হয়।
ব্যবহারের ধরন অনুযায়ী সাবস্টেশন(Substation) কে চারটি ভাগে ভাগ করা যায়-
- সুইচিং সাবস্টেশন (Switching substation)
- কনভারর্টিং সাবস্টেশন (Converting substation)
- পাওয়ার ফ্যাক্টর(Pf) কারেকশন সাবস্টেশন (Power Factor Correction Substation)
- ইন্ডাস্ট্রিয়াল সাবস্টেশন (Industrial substation)
সুইচিং সাব-স্টেশনঃ
যে সাব-স্টেশন থেকে একটি লাইন থেকে অনেকগুলো আউটগোয়িং লাইন করা হয় এবং নিয়ন্ত্রণ করা যায় তাকে সুইচিং সাবস্টেশন(Sub-Station) বলে।
কনভারর্টিং সাব-স্টেশনঃ
অনেক সময়ে বিভিন্ন ধরনের কাজের জন্য এসি(AC) থেকে ডিসি(DC) তে এবং ডিসি(DC) থেকে এসি(AC) তে কনভার্ট এর প্রয়োজন হতে পারে, সেক্ষেত্রে যে সাব-স্টেশন গুলো তৈরি করা হয় সেগুলো কে কনভার্টিং সাবস্টেশন(Sub-Station) বলা হয়।
পাওয়ার ফ্যাক্টর কারেকশন সাবস্টেশনঃ
যে সাব-স্টেশন গুলো শুধুমাত্র পাওয়ার ফ্যাক্টর কারেকশন(PFC) অর্থাৎ পাওয়ার ফ্যাক্টর ইমপ্রুভমেন্ট করার জন্য ব্যবহার করা হয়ে থাকে সেইসব সাবস্টেশন(Sub-Station) গুলোকে পাওয়ার ফ্যাক্টর কারেকশন সাবস্টেশন(Sub-Station) বলা হয়ে থাকে।
ইন্ডাস্ট্রিয়াল সাবস্টেশন:
বিভিন্ন ধরনের ছোট বড় কল-কারখানার জন্য নির্মিত সাবস্টেশন(Sub-Station)গুলোকে ইন্ডাস্ট্রিয়াল সাবস্টেশন(Sub-Station)বলা হয়। এ ধরনের সাবস্টেশন(Sub-Station) কল কারখানার মালিকরা নিজেরাই তৈরি করে নেয় এবং রক্ষণাবেক্ষণ করে থাকে।
স্থাপনের জায়গা অনুসারে সাবস্টেশন(Sub-station) কে আবার ৩ ভাগে ভাগ করা যায়-
- ইনডোর সাবস্টেশন (Indoor substation)
- আউটডোর সাবস্টেশন (Outdoor substation)
- পোল মাউন্টেড সাবস্টেশন (Poll Mounted Sub-Station)
ইনডোর সাব-স্টেশনঃ
যেই সব সাব-স্টেশন গুলো ঘরের ভিতরে স্থাপন করা হয় সেগুলো কে ইনডোর সাবস্টেশন (Indoor Substation) বলা হয়।
আউটডোর সাবস্টেশনঃ
যে সমস্ত সাব-স্টেশন ঘরের বাইরে অর্থাৎ খোলা জায়গায় স্থাপন করা হয় সেগুলো কে আউটডোর সাব-স্টেশন(Sub-Station) বলা হয়।
পোল মাউন্টেড সাবস্টেশনঃ
এই ধরনের সাব-স্টেশন(Sub-Station)সাধারণত বাসা বাড়ির আশেপাশের পোলের উপরে স্থাপন করা হয়ে থাকে।
✅ সাবস্টেশনের সার্কিট ডায়াগ্রাম?
✅ সাব-স্টেশনের ভিতরে কি কি থাকে?
- Isolator
- Bus Bar
- Lightning Arresters
- Step Down Or Step Up Transformer
- Circuit breaker (Oil circuit breakers (OCBs), Vacuum circuit breaker (VCB), Air circuit breakers.)
- Feeder
- Energy Mitter
- Current transformer(CT)
- Potential Transformer(PT)
✅ সাব-স্টেশন ক্যাপাসিটি ক্যালকুলেশন করার পদ্ধতি?
সাব-স্টেশনের(Sub-Station) ক্যাপাসিটি ক্যালকুলেশন করার আগে অবশ্যই আপনাকে লোড ক্যালকুলেশন জানতে হবে।
এরপর আপনাকে আরো চারটি ধাপ অনুসরণ করতে হবে,
- Transformer Selection
- LT Switchgear selection
- HT switchgear election
- PFI Panel Selection
ট্রান্সফরমার নির্বাচন (Transformer Selection)
যে পরিমান লোড হবে লোডের উপর ভিত্তি করে 3 ফেজ ট্রান্সফর্মার সিলেকশন করতে হবে। বোঝার সুবিধার্থে একটি উদাহরণ দেখা যাক-
তাহলে আমাদের ৮০০ কেভিএ ট্রান্সফর্মার নির্বাচন করতে হবে।
এখন প্রশ্ন আসে আমাদের লোড = .৭৮০.৪৫ কেভিএ ছিল তাহলে আমরা কেন ৮০০ কেভিএ ট্রান্সফর্মার নির্বাচন করলাম?
তার মূল কারণ হচ্ছে বাজারের একটি নির্দিষ্ট মানের ট্রান্সফর্মার পাওয়া যায়। সচরাচর ট্রান্সফর্মার মেনুফেকচারিং কোম্পানি গুলোর একটি স্ট্যান্ডার্ড অনুসরণ করে ট্রান্সফর্মার তৈরি করে থাকে।
- 100 KVA ট্রান্সফর্মার,
- 200 KVA ট্রান্সফর্মার,
- 250 KVA ট্রান্সফর্মার,
- 315 KVA ট্রান্সফর্মার,
- 400 KVA ট্রান্সফর্মার,
- 500 KVA ট্রান্সফর্মার,
- 630 KVA ট্রান্সফর্মার,
- 750 KVA ট্রান্সফর্মার,
- 800 KVA ট্রান্সফর্মার,
- 1000 KVA ট্রান্সফর্মার,
- 1250 KVA ট্রান্সফর্মার।
এল.টি সুইচগিয়ার সিলেকশন (LT Switchgear Selection)
ট্রান্সফরমারের ক্যাপাসিটি কে 1.6 দ্বারা গুন করলে এলটি সুইচ গিয়ার এর ক্যাপাসিটি পাওয়া যায়। সুতরাং ৮০০ KVA ট্রান্সফর্মার এর জন্য সুইচ গিয়ার এর ক্যাপাসিটি হবে-
৮০০ X ১.৬ = ১২৮০ এম্পিয়ার (A)
এইচ.টি সুইচগিয়ার সিলেকশন (HT Switchgear Selection)
এইচ টি সুইচগেয়ার বলতে এখানে ব্রেকার সিলেকশন বোঝানো হয়েছে। ট্রান্সফর্মার 630 কেভিএ এর নিচে হলে MCCB / ACB ট্রান্সফর্মার 630 কেভিএ এর বেশি হলে VCB ব্যবহার করতে হবে।
এখানে,
- MCCB = Molded Case Circuit Breaker.
- ACB = Air Circuit Breaker.
- VCB = Vacuum Circuit Breaker.
সুতরাং এখানে সুতরাং ৮০০ KVA ট্রান্সফর্মার এর জন্য VCB ভ্যাকুয়াম সার্কিট ব্রেকার ব্যবহার করতে হবে।
পি.এফ.আই প্যানেল সিলেকশন ( PFI Selection)
ট্রান্সফরমারের ক্যাপাসিটি কে 0.6 দ্বারা গুণ করলে পিএফআই(PFI) প্যানেল এর ক্যাপাসিটি পাওয়া যায়।
সুতরাং ৮০০ KVA ট্রান্সফর্মার এর জন্য পিএফআই(PFI) হবে,
৮০০ x ০.৬ = ৪৮০ KVAR
বন্ধুরা এই ছিল সাবস্টেশন কি? এবং Substation এর ভিতরে কি কি থাকে? আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনার ভাল লাগে অবশ্যই আপনাদের বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করবেন এবং কমেন্ট এ আপনার মতামত জানাতে পারেন।